লুসাইলের আইকন স্টেডিয়ামে আকাশি-সাদা জার্সিধারী সমর্থকদের মিলনমেলা বসেছিল। লিওনেল মেসির নেতৃত্বে দুইবারের চ্যাম্পিয়নদের দারুণ সূচনা দেখার অপেক্ষায় সবাই। অনেক আশা নিয়ে প্রিয় দলের খেলা দেখতে এসে শুরুতে বড় ধাক্কা খেতে হয়েছে। সৌদি আরবের বিপক্ষে এগিয়ে থেকেও হারের তিক্ত স্বাদ নিতে হয়েছে! লিওনেল স্কালোনির দলের টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ডে ছেদ পড়লো।
অথচ মেসির নেতৃত্বে শুরুর ম্যাচ থেকে উদ্ভাসিত খেলবে ম্যারাডোনার উত্তরসূরিরা- এমনটি প্রত্যাশিত থাকলেও হিতে বিপরীতই হলো! সব ধারণাকে উড়িয়ে সৌদি আরবের জয়গান হয়েছে।
৮০ হাজার দর্শক ক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামে একটু পরপরই উল্লাসে ফেটে পড়ছিল সবাই। কোনও সময় আর্জেন্টিনা আবার সৌদি আরবের সমর্থকরা।
অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে মরুর বুকে বিশ্বকাপ শুরু হলো আলবিসেলেস্তেদের। স্কালোনির কোনও কৌশলই যে ধোপে টিকলো না।
মেসি পেনাল্টি থেকে গোল করে চার বিশ্বকাপে অনন্য রেকর্ডের অধিকারী হলেন। তবে আজ তার লক্ষ্যভেদের পর তিনটি সুযোগ তো অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। মার্তিনেজদের থাকতে হয়েছে হতাশায়। আর সৌদিরা নিজেদের সামর্থ্য দেখিয়ে শুধু গোল শোধই করেনি, জয়সূচক গোলটিও আদায় করে নিয়েছে।
একদিক দিয়ে সৌদি আরব এগিয়ে রইলো। এশিয়ার প্রতিনিধি হয়ে প্রথম জয়টা তুলে নিয়েছে। যেখানে স্বাগতিক কাতার পারেনি।
সৌদি আরবের এমন জয় দেখে সমর্থকরা বেজায় খুশি। গ্যালারি থেকে বের হয়ে এক দল তো নিজেদের পতাকা নিয়ে উল্লাস করছিল। আব্দুল্লাহ আল খলিফা আনন্দ চিত্তে বললেন, ‘মেসিকে জিততে দেয়নি। আমরা ম্যাচ জিতেছি। এটা আমদের জন্য বড় অর্জন।’
তা তো হবেই, আগের চার দেখায় যে ড্র ছিল তাদের সম্বল। এবার প্রথম ম্যাচ জিতে আনন্দের ফল্গুধারা বইছে।
তাদের মধ্যে একজন বিশ্বকাপের ট্রফি নিয়ে উল্লাসে যোগ দিয়েছেন! হয়তো তাদের কাছে এই জয় বড় কিছুই।
আর আর্জেন্টিনার খেলা দেখতে এসেছেন যারা, তারা পুরোই হতাশ। বুয়েন্স আয়ার্স থেকে দোহায় আসা রোদ্রিগেস তো হতাশা কণ্ঠে বললেন, ‘আমাদের দলের জয় দেখা হলো না। আমরা হতাশ।’
পরের ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে ঘুরে না দাঁড়ালে ১৯৮৬ সালের পর বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন যে কঠিন থেকে কঠিন হবে।