এক তাসনিয়ায় উত্তাপ মিডিয়াপাড়া। কাজে নয়, কথিত এই অভিনেত্রী আলোচনা নিজের খোলামেলা ফটোশুটে। কখনো নগ্ন কখনো বা অর্ধ নগ্ন সেই ফটোশুটের উত্তাপের আগুনে ঝলসে গেছে অনেক পরিবার। এর বাইরে ব্ল্যাকমেলিং এর শিকার হয়ে বরবাদ অনেকের দাম্পত্য জীবন।
এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ জনমনে কৌতুহল কে এই তাসনিয়া? তাসনিয়ার ফেসবুক প্রফাইল ঘেঁটে কাভার পেইজে তার সাথে যার ছবি দিয়ে- তিনি পেশায় একজন ব্যবাসায়ি এবং এফবিসিসিআই এর সাবেক পরিচালক।
বিবিহিত এবং দুই সন্তানের জনক। মিডিয়া পাড়ায় গুঞ্জন রয়েছে, তিনিও তাসনিয়ার জালে ফেসেঁছিলেন। তার বিরুদ্ধে ধর্ষনের মামলা করে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছিলেন কথিত মডেল- অভিনেত্রী নামধারী এই নারী।
যদিও পরে আদালতে দাখিল করা পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে ওই ব্যবসায়ী নিজেকে নির্দোষ বলে প্রমাণ করেন। তবে ততদিনে যা হবার তাই হয়ে গেছে। সুনাম ও সন্মান খুইঁয়ে নাস্তানাবুদ হন ওই ব্যবসায়ী।
অবশ্য তাসনিয়ার সাজানো মামলায় জিতলেও মুক্তি পাননি হয়রানী থেকে।
এখনো সামাজিকভাবে হেয় করতেই ফেসবুকে নিজের সাথে তাসনিয়া কাভার ফটো হিসেবে ওই ব্যবসায়ির ছবি ব্যবহার করে চলেছেন বলে অভিযোগ ঘনিষ্ঠ সুত্রের।
কথিত এই মডেলের চলাফেরা ও বিলাসী জীবন যাপন নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।
হাতে তেমন কাজ না থাকলেও কোথা থেকে আসে এত অর্থ- তা নিয়ে-ও রয়েছে নেতিবাচক নানা মত।
সম্প্রতি গুলশান থানায় এক আলোচিত প্রযোজক ও পরিচালকের করা একটি সাধারন ডায়েরির সূত্রে নাম আলোচনায় আসে তাসনিয়ার নাম। ওই জিডির একটি অংশে তিনি অভিযোগ করেন, তার সাবেক স্ত্রী ইচ্ছুক তাসনিয়া নামের একটি মেয়েকে সিনেমার নায়িকা বানানোর আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার কাছে নিয়ে যেতেন। দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার প্রতিবেদনে এমন একটি ইংগিতপুর্ণ তথ্য আসার পর শোবিজ অঙ্গন বিশেষ করে এফডিসিতে তাকে নিয়ে শুরু হয় কানাঘুষা।
গুগল সার্চ করলে তাসনিয়া রহমানের অসংখ্য নগ্ন ও অর্ধ নগ্ন ছবি বের হয়ে আসে। যা বাংলাদেশের সামাজিক রীতিনীতির পরিপন্থী। রীতিমত পর্ণোগ্রাফি আইনে দন্ডনীয় অপরাধ।
একই নামে থাকা একটি ফেসবুক প্রোফাইলেও তার নানা অভিব্যক্তিপুর্ণ অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও বিভিন্ন হোটেল রুমে অবস্থানের ছবি পাওয়া যায়। ফেসবুকে তার নির্দিষ্ট পেশা উল্লেখ না থাকলেও তিনি নিজেকে মডেল ও চিত্রনায়িকা দাবি করেন।
উল্লেখযোগ্য কোন কাজ বা দৃশ্যমান আয় না থাকলেও ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায় তিনি অডি এবং মার্সেডিজের মত বিলাসবহুল গাড়িতে ঘুরে বেড়ান।
তার কাজের রেকর্ড ঘেঁটে দেখে গেছে, সম্প্রতি তিনি নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরীর মু্নসীগিরি নামের ওয়েবে ক্ষুদ্র একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
নিম্নবিত্ত পারিবারের মেয়ে হিসেবে ছোট খাটো চরিত্রে দু’একটা কাজ করে কিভাবে এমন বিলাসী ও রহস্যময় জীবনযাপন করা সম্ভব- সেই্ প্রশ্ন শোবিজের অনেকের।
তবে তাসনিয়াকে চেনেন জানেন – এমন অনেকেই বলছেন, মেয়েটার অনেক নেতিবাচক ইমেজ আছে। বিভিন্ন বিত্তশালীদের মনোরঞ্জন এবং ফাসিঁয়ে মামলা এবং ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় তার বিলাসবহুল জীবন যাপনের আসল রহস্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রযোজক বলেন, একজনে মাধ্যমে মেয়েটির সাথে কিছুদিন ঘনিষ্ঠভাবে মিশে যখন দেখলাম সে আস্ত একটা বাটপার।
জানতে পারি বিচারাঙ্গনের সাথে জড়িত এক ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ট হবার পর তিনি পরিকল্পিত সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বর্তমানে প্যারলাইজড।
অথচ তার ক্ষমতা দেখিয়ে তাসনিয়া বিভিন্ন জনকে হুমকি দিতো এমনকি আমজাদ নামের এক ধনীর দুলালকে ফাঁসিয়ে দেয় সে।
হোটেল রুমে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে ছেলেটির বিরুদ্ধে।
এটা নেশাগ্রস্ত কিংবা বিকৃত মস্তিস্কের আচরণ ছাড়া কিছুই নয়- যোগ করেন তিনি।
সম্প্রতি এক মডেল- উপস্থাপিকার সাথে ফাঁস হয় তাসনিয়ার কথোপকথন।
কল রেকর্ডে আলোচিত- সমালোচিত ওই উপস্থাপিকা তাসনিয়ার বিরুদ্ধে পতিতাবৃত্তির অভিযোগ তুলে বলতে শোনা যায়, ক্লায়েন্টের সাথে তোমার কলরেকর্ড আমার কাছে আছে। আমি জানি তুমি এগুলো করে ফ্যামিলি চালাও। আমি আমার অবিবাহিত বন্ধুদের তোমাকে ভাড়া করতে বলবো। কিন্তু আমার স্বামীর সাথে কেনো? আমি জানি তুমি মাদকাসক্ত এবং আমার স্বামীর সাথে কথা বলো।
জবাবে এসব অভিযোগ অস্বীকার না করে বরং বাংলাদেশে আসলে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে তাসনিয়া রহমানকে বলতে শোনা যায়, তোর কথা চিন্তা করে আমি রিপনের সাথে কথা বলা বন্ধ করেছি। আর তুই আমারে ৩ হাজার টাকার মাগি বললি?
কয়েকবছর আগে এক আইটি ব্যবসায়ি তাসনিয়ার শিকার হয়ে ফেঁসে নাস্তানাবুদ হয়ে ভয়ে আতংকে দেশ ছেড়ে পাড়ি দেন আমেরিকায়।
জানা গেছে, কিছুদিন ওই ব্যবসায়ির সাথে একই বাসায় থেকেছিলেন তাসনিয়া। পরবর্তীতে বিবাহিত ওই ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে গর্ভপাতের অভিযোগে মামলা করার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। সমঝোতার নামে কিছু দিন সময় ক্ষেপন করে ওই ব্যবসায়ি গোপনে আমেরিকায় পাড়ি দেন বলে তার ঘনিষ্ট বন্ধু (যিনি মোহাম্মদপুরের একটি ক্লিনিকে উল্লেখিত গর্ভপাতে সহায়তাকারী) জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ব্যবসায়ির স্ত্রী গণমাধ্যমে প্রমান পাঠিয়ে জানিয়েছেন, তার স্বামীর সাথে তাসনিয়া অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরেবর্তীতে পারবিবারিক চাপে তাকে ছাড়তে রাজী হন ওই ব্যবসায়ি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাসনিয়া তার কাছে মোটা অংকের টাকা চায়। অন্যথায় মিডিয়ার কাছে ঐ ব্যবসায়ির পরিচয় প্রকাশ করার হুমকি দেয়।
প্রতারনা, অর্থ আত্মসাত এবং হুমকিসহ নানাবিধও অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আছে একাধিক মামলা। এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাসনিয়া ফোন ধরেন নি।
(এই প্রতিবেদনে প্রকাশিত সকল তথ্যের প্রমান আমাদের কাছে। সামাজিক মর্যাদা বিবেচনায় আমরা ভিকটিমদের নাম পরিচয় প্রকাশ থেকে বিরত রয়েছি । তবে এসব অভিযোগের সপক্ষে ভয়েজ রেকর্ড, স্ক্রীন শর্ট ও অন্যান্য ডকুমেন্ট আমাদের হাতে রয়েছে)