দেশের রাজনৈতিক বিরোধমুখর পরিবেশ দূর করে আস্থা তৈরিতে বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা কতখানি সহায়ক ভূমিকা রাখবে? পাশাপাশি সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলন ও মানুষের ওপর কেমন প্রভাব পড়তে পারে—এমন প্রশ্ন ছিল বিএনপি ও দলটির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের কাছে।
বাংলালাইভের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করু
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ শীর্ষক শিরোনামে ২৭ দফা উপস্থাপন করে বিএনপি। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনার পর বিস্তারিত তুলে ধরেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি দলটির সঙ্গে আন্দোলনে শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অংশ নেন কয়েকজন দলনিরপেক্ষ সাংবাদিক, শিক্ষকও।
রূপরেখা উপস্থাপনের পর প্রশ্নে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নিঃসন্দেহে দেশের রাজনীতিতে আস্থা তৈরিতে বিএনপির ২৭ দফা রোডম্যাপ হিসেবে কাজ করবে। আমাদের দল মনে করে, সব দল-মত নির্বিশেষে জাতিগত ঐক্য গড়ে তুলতে ‘রেইনবো নেশন্স’-এর বিকল্প নেই।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের ভাষ্য—‘আমরা সচেতনভাবে এই রূপরেখা করেছি, যাতে অন্যান্য যে দল আছে, তাদের যে আন্দোলনের কর্মসূচি, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকে। এই কর্মসূচি সব দলের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অনেক সহায়ক হবে। জাতিকে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ করবে।’
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা এই রূপরেখায় যেটা পেয়েছি, তা হচ্ছে আমরা একটা গুণগত পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। অতীতের থেকে পরিবর্তন নিয়ে এসেছি। এখন কতটা বহন করে নিয়ে যেতে পারবো, সেটা ভবিষ্যতে দেখা যাবে। আজকে বিএনপি যে আয়োজনটা করলো, এটা তাদেরই।’
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি জানিয়েছেন, তারা বিএনপির প্রস্তাবকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই রাষ্ট্র সংস্কার ও গণতন্ত্র রূপান্তরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে পরিবর্তন আসবে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রের কাছে প্রশ্ন চলে গেছে—তারা রাষ্ট্রে কী পরিবর্তন আনবে। চলমান জমিদারি চলবে, নাকি জনগণের পক্ষে রূপান্তরের দিকে যাবে।’
রূপরেখা ঘোষণা করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেনরূপরেখা ঘোষণা করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন
বিএনপির জোটসঙ্গী কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম দাবি করেছেন, ঠিক ১৫ বছর আগে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি প্রতিষ্ঠা করার পর এমন আহ্বান রেখেছিলাম। কিন্তু আমার কণ্ঠ নিচু ছিল বলে, স্বরের উচ্চতা ছিল না বলে, সেটা আমরা আদায় করতে পারিনি।’
বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘চলমান আন্দোলনে এই রূপরেখা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। আন্দোলন আরও বেগবান করার ক্ষেত্রে এবং দ্রুত নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ত্বরান্বিত করবে।’
দলের বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন মনে করেন, বিএনপির রূপরেখা দেশের তরুণ সমাজকে উদ্বুদ্ধ করবে। তারা এই রূপরেখায় পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখবে, যার মধ্য দিয়ে জবাবদিহি রাষ্ট্রের বীজ বপন হবে।
বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমীন পুতুলের দাবি, বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামোর রূপরেখা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক ও যৌক্তিক দাবির প্রতিফলন।