ঢাকাশুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভাষা আন্দোলনে অবদান না থাকলে বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন কেন?

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩ ৩:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান না থাকলে পাকিস্তান সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জেলে বন্দী করেছিল কেন এমন প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭৫-এর পর বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘একুশে পদক-২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান নামে একটি দেশের সৃষ্টি হয়, যারা পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। একসময় তারা আমাদের সংস্কৃতিতে আঘাত হানে। আমাদের ওপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেয়। করাচিতে এক আলোচনায় তারা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমাদের দেশে প্রবল আন্দোলন শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের পর ১৯৫৩ সালে প্রথম ভাষা শহীদ দিবস পালন করা হয়। আরমানিটোলায় এক সভায় এ দিবস পালনের দাবি তোলা হয়। এরপর ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। এরপরেও পাকিস্তানিরা থেমে থাকেনি। তারা তখন উর্দু হরফে বাংলা লেখার নিয়ম করে, আরবি হরফে বাংলা লেখার নিয়ম করে। রবীন্দ্রনাথের গান নিষিদ্ধ করে। যার প্রতিবাদে ছাত্রসহ সবাই রাজপথে নেমে আসে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বেই আমরা ভাষা আন্দোলনে, মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করেছি। ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমাদের এ আন্দোলন ছিল সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন।

শেখ হাসিনা বলেন, একটা সময় আমাদের দেশে জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এমনকি শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। সেসময় অনেকে বলেছেন, শেখ মুজিব তো আন্দোলন করেননি, জেলে ছিলেন। কিন্তু তিনি তো ভাষা আন্দোলনের জন্যই কারাবরণ করেছেন।

সরকারপ্রধান বলে ,মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় ছিলেন। এই সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই তিনি সবার স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে নির্মম হত্যার ২১ বছর পর আমরা ক্ষমতায় আসি। এক দফার পর পরবর্তীতে তিন দফায় ক্ষমতায় থাকায় বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ২০৪২ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়ে তোলা। আমরা বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যারা একুশে পদক পেয়েছেন সবাইকে আমার অভিনন্দন। এমন আরও অনেকেই আছেন, যাদের নাম আমরা জানি না। তাদের অবদানকে আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি। আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এগিয়ে যায়।

এর আগে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে ‘একুশে পদক-২০২৩’ প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।