ঢাকাশুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাভারে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের বিরুদ্ধে চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগ

আল-আমিন শেখ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট । বাংলালাইভ২৪.কম
ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১ ৮:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সাভারে চাকরির নামে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের সাভার শাখার বিরুদ্ধে।

প্রথমে মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা তার পর লাখ টাকা পর্যন্ত মাসে আয় করা সম্ভব ফাঁদে ফেলতে এমনই লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হয়। আপাতদৃষ্টিতে লোভনীয় এমন চাকরির প্রস্তাবে প্রায়শই আগ্রহী হন উঠতি বয়সী বেকার তরুণ তরুণীরা। তারা জানতেও পারেন না যে একটি বড় সংখ্যক মানুষের কাছ থেকে ছোট ছোট অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার এটি একটি কৌশল।

এমনই একটি অফারে আগ্রহী হন ১৮ বছর বয়সী ফরিদপুর থেকে আসা নূর আসলাম (রাহাত)। আন্ডার মেট্রিক এই শিক্ষার্থী জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স লিমিটেডর এক প্রতারকের খপ্পরে পড়েন। তাকে বলা হয় ৫হাজার টাকা দিয়ে সদস্য হলেই ইনকাম শুরু।

এই অফারে বাড়ি থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা এনে নিজের বায়োডাটা ও ৫হাজার টাকা জমা দেন জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড অফিসের নাইম নামের এক কর্মকর্তার কাছে। এরপর ট্রেনিং ও থাকার জন্য চাওয়া হয় আরও ৮হাজার টাকা।

শুধু রাহাত একা নয়, আমার সংবাদের এই প্রতিদবেদক অন্তত ৫০ জন তরুণ ও তরুণীর সঙ্গে কথা বলে। যাদের বেশিরভাগ বেকার এবং শিক্ষার্থী । তাদের সবাই প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের ভিতরে শতাধিক তরুণ তরুণী চাকরি নিতে এসেছেন। ওই অফিসে চাকরি নিতে আগতদের ইন্টারভিউ (সাক্ষাৎকার) নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির ইউনিট ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম।

কোন পদে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ নেওয়া হচ্ছে শরিফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন চাকরির বিষয়ে না। আমাদের এখানে সদস্য হয়েছে তাই ইন্টারভিউ নিচ্ছি। আপনি আমার সাথে কথা না বলে বসদের সাথে কথা বলেন। এই বলে তিনি তার কক্ষ থেকে বেড়িয়ে যান।

পাশের কক্ষে ট্রেনিং নিতে আসা অর্ধশতাধীক তরুণ তরুণী ইতিমধ্যে পরিশোধ করেছেন দাবিকৃত টাকা। এদের মধ্যে অনেককে আবার ফাইনান্সিয়াল এজেন্ট হিসেবে দেওয়া হয়েছে আইডি কার্ডও। তাদের মধ্যে একজন মো. রিয়াজুল ইসলাম। দুই মাস আগে যুক্ত হয়েছেন এই প্রতিষ্ঠানে। এখনো পযর্ন্ত তার দেওয়া টাকার রশিদ পাননি, এমনকি টাকা জমা দেওয়ার সময় তাকে বলা হয়েছিলো জমাকৃত টাকা তার নিজের একাউন্টে জমা করা হবে তাও করা হয়নি।

চাকরি নিতে আসা সকলের টাকা নিতেন নাঈম হোসেন। ৫হাজার টাকা কেন নেওয়া হয় জানতে চাইলে সাংবাদিকদেও উপর চড়াও তিনি।

এসময় জেনিথ ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড সাভার শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. আ-আমিন মিয়াজী সাংবাদিকদের তার কক্ষে নিয়ে গিয়ে সকলকে বাহিয়ে বেড় করে দেয়।

চাকরির নামে প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনাদের কাছে কেই অভিযোগ করলে আমরা তার টাকা ফেরত দিয়ে দেব। পরে সাদা কাগজে একটি লিখিত নিয়ে নূর আসলাম রাহাতের টাকা ফেরত দেন তিনি।

এসব বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে জেনিথ ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ডিএমডি হাসান বলেন, আপনি আমার অফিসে গিয়ে হামলা চালিয়েছেন বললো আমার স্টাফরা। আপনি আমার অফিস নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। আপনি আমারে চেনেন না, আমি আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা। এই বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

এবিষয়ে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, প্রতারণার বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।